"শিল্পী হওয়া যেন এখন অপরাধ, ফারিয়া ইস্যুতে ক্ষোভ জানালেন অধরা খান"
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের শোবিজ অঙ্গন। দেশের সিনেমা সংশ্লিষ্ট অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করছেন। এ তালিকায় এবার যুক্ত হলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী অধরা খান।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক হ্যান্ডলে অধরা খান লিখেছেন,
“আমরা যারা শিল্পী, নায়ক-নায়িকা—এই সমাজে আমাদের প্রতি ভয়াবহ অপমানজনক দৃষ্টিভঙ্গি। নায়িকা মানেই অপবাদ! শিল্পী মানেই যেন অপরাধী! বলা হয়, আমরা অন্যের টাকায় চলি, খাই, পড়ি—লজ্জা নেই, সম্মান নেই।”
শিল্পীদের প্রতি সমাজের এই ‘অপমানজনক মনোভাব’ নিয়ে আরও গভীর হতাশা প্রকাশ করে অধরা লেখেন,
“শুটিং চলাকালীন আমাদের পিরিয়ডের প্যাডের টাকাও নাকি দিতে হয় প্রযোজককে—এই নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে বাইরে চলে তাচ্ছিল্য, বিদ্রুপ। নায়িকা মানেই কারও না কারও উপর নির্ভরশীল—এই ধারণা আজও আমাদের গায়ে সেঁটে আছে।”
নুসরাত ফারিয়ার প্রসঙ্গে অধরা বলেন,
“সে তখন দেশের বাইরে ছিল, দেশের প্রতিনিধিত্ব করছিল একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে। দূর থেকে সে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে, যা একজন শিল্পীর দায়িত্ববোধ থেকেই এসেছে। অথচ সেই সময়েও তার বিরুদ্ধে মামলা—এটা আমাদের ‘সম্মানের’ সর্বোচ্চ রূপ! জাতীয়ভাবে সম্মানিত হচ্ছি আমরা!”
ফারিয়ার গ্রেপ্তারে ক্ষোভ প্রকাশ করে অধরা খান আরও লেখেন,
“সে চাইলে দেশে ফিরতো না। কিন্তু দেশের প্রতি ভালোবাসা, আইনের প্রতি বিশ্বাস ও নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই ফিরেছে। অথচ তাকে বোঝানো হলো, নায়িকারা শুধু নিজের খরচ চালায় না—তারা অর্থ জোগান দেয়, এমনকি খুনেও জড়িত! কী অদ্ভুত শক্তিশালী বানানো হচ্ছে আমাদের!”
চলচ্চিত্র শিল্পে মানসিক চাপ ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,
“এই পেশায় টিকে থাকতে কতটা মানসিক বল লাগে, তা বাইরে থেকে কেউ বোঝে না। এত অপমান, এত চাপ—কোনো পেশায় এভাবে সহ্য করতে হয় না। কেউ যেন এ অভিজ্ঞতার শিকার না হয়। কিন্তু আমাদের নিয়েই সবাই হাসে। এখান থেকেই প্রমাণ হয়—আমরা শিল্পীরা ‘নির্লজ্জ’! কারণ শিল্পী হওয়া আজকাল যেন সত্যিই একটা অপরাধ।”
প্রসঙ্গত, নুসরাত ফারিয়া বর্তমানে ভাটারা থানায় দায়ের করা এক হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয়। এরপর আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।