ক্ষমতাচ্যুতির পর তিন মাস দেশে ছিলেন কাদের, ফেরার চেষ্টায় নজর দিয়েছিলেন শ্রমিক অসন্তোষের দিকে
ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় দীর্ঘদিনের শাসক দল আওয়ামী লীগ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নেতাকর্মীদের ফেলে পরিবারসহ পালিয়ে যান ভারতে। এ সময় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা বহু প্রভাবশালী নেতা হঠাৎ করেই নিরব হয়ে যান—যারা আগে প্রতিদিনই উসকানিমূলক বক্তৃতায় সরব ছিলেন।
এই চরম দুঃসময়ে দলীয় কর্মীরা অনেক কেন্দ্রীয় নেতারই পাশে পাননি। তেমনই একজন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুরোপুরি নিখোঁজ থাকলেও সম্প্রতি তিনি মুখ খুলেছেন ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল-এর এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে। ভাইরাল হওয়া সেই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার দেশত্যাগের আগের কিছু অজানা অধ্যায়।
সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের জানান, সরকার পতনের পর তিনি প্রায় তিন মাস বাংলাদেশেই ছিলেন এবং রাজনীতিতে ফেরার পথ খুঁজছিলেন। তার ভাষ্য,
"আমি বাংলাদেশেই ছিলাম তিন মাসের মতো। একটা উদ্দেশ্য ছিল—ওখান থেকে কিছু করা যায় কিনা। সংগঠিত করা যায় কিনা।"
তিনি বলেন, ওই সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক ও কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল, বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতে। প্রতিদিন এসব আন্দোলনের খোঁজ রাখতেন তিনি।
"ভাবলাম—এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু করা যায় কিনা। এই চিন্তায় তিন মাস কেটে গেল," বলেন কাদের।
তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে একের পর এক সাবেক মন্ত্রী ও নেতা গ্রেপ্তার হতে থাকেন। তখন ওবায়দুল কাদের নিজেও বিপদের আঁচ পান।
"আমি তো নেত্রীর পরেই ছিলাম। তখনই ২১২টা খুনের মামলায় আসামি হয়ে যাই," বলেন তিনি।
তিনি জানান, পরিস্থিতি এতটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে যে, পরিচিতজন ও কিছু শুভানুধ্যায়ীও তাকে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেন।
"আমার তো বাইপাস সার্জারি হয়েছিল, অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয়। আমি ধরা পড়লে ওষুধ দেবে কে? এই চিন্তাও ছিল," — এমনটাই জানালেন কাদের।
এরপর দীর্ঘ চিন্তা-ভাবনার পরই তিনি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।