গাজা সংকটে প্রতিবাদ: ইসরায়েলের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করল বার্সেলোনা নগর পরিষদ

গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে স্পেনের বার্সেলোনা নগর পরিষদ। একই সঙ্গে ১৯৯৮ সালে তেল আবিব-জাফা শহরের সঙ্গে স্বাক্ষরিত মৈত্রীচুক্তিও স্থগিত করা হয়েছে।

শনিবার (৩১ মে) বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, স্পেনের শাসক সমাজতান্ত্রিক দলসহ বামপন্থি ও স্বাধীনতাপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনে প্রস্তাবটি নগর পরিষদে পাস হয়।

সুস্পষ্ট বার্তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে

প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখবে না বার্সেলোনা।

এছাড়া বার্সেলোনার বৃহত্তম বাণিজ্য মেলা আয়োজক প্রতিষ্ঠান ফিরা দে বার্সেলোনা এবং বার্সেলোনা বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে যেন তারা এমন কোনো ইসরায়েলি সরকারি প্রতিনিধি বা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ অনুমোদন না দেয়—যারা অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা গাজা সংঘাত থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।

‘সম্পর্ক রাখা অগ্রহণযোগ্য’—মেয়র

বার্সেলোনার বর্তমান মেয়র জাউমে কোলবোনি পরিষদে বলেন, “গত দেড় বছরে গাজায় যা ঘটেছে এবং ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাগুলো আমাদের কাছে সম্পর্ক রক্ষাকে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।”

আগেও ছিল এমন উদ্যোগ

এর আগে ২০২৩ সালে তৎকালীন মেয়র অ্যাডা কোলাউ একই ধরনের সম্পর্কচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তবে কোলবোনির নির্বাচনের পর তা বাতিল করা হয়। এবার তার নেতৃত্বেই সেই প্রস্তাব আবার পাস হলো।

প্রতীকী হলেও শক্ত বার্তা

যদিও এই পদক্ষেপের বাস্তবিক প্রভাব সীমিত, তবে স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসেবে বার্সেলোনার এমন অবস্থান আন্তর্জাতিকভাবে একটি জোরালো বার্তা হিসেবে ধরা পড়ছে। এটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এই শহর বিশ্বখ্যাত ফুটবল ক্লাব এফসি বার্সেলোনার আবাস এবং ইউরোপের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র।

এই সিদ্ধান্ত গাজার মানবিক সংকট ঘিরে ইসরায়েলের প্রতি বাড়তে থাকা বৈশ্বিক সমালোচনার সুরে বার্সেলোনাকে একটি দৃঢ় অবস্থানে নিয়ে এসেছে।