যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে হামাস

গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন একটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে, যেখানে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি বন্দি বিনিময়ের কথাও বলা হয়েছে। হামাস এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে বলে সোমবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের নেতৃত্বে এই নতুন প্রস্তাবটি হামাসের কাছে পৌঁছানো হয়। এতে প্রস্তাব করা হয়েছে ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলের হাতে থাকা বহু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি এবং গাজা উপত্যকা থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার।

সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, এই পরিকল্পনার আওতায় হামাস দুই ধাপে ইসরায়েলের ১০ জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে ইসরায়েল গাজা থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করবে এবং যুদ্ধ ৭০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে।

প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েল কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের অনেকেই দীর্ঘমেয়াদি সাজা ভোগ করছেন।

তবে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ মার্চ ইসরায়েল পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাতিল করে গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করে। দুই দিন পর হামাস ও মিত্র সংগঠনগুলো ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে রকেট হামলা চালায়।

হামাস জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল গাজা থেকে সম্পূর্ণরূপে সেনা প্রত্যাহার করে, তাহলে তারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অপহৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারা কেবল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি, সেটিও শুধুমাত্র জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে। তার বক্তব্য, হামাস সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।