ইসরায়েলের আয়রন ডোম ও আয়রন বিম: কীভাবে কাজ করে, কত খরচ?

ইসরায়েল বহু বছর ধরে আকাশ প্রতিরক্ষায় ‘আয়রন ডোম’ সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। ২০১১ সালের মার্চ থেকে ব্যবহৃত এই সিস্টেমটি স্বল্প পাল্লার রকেট ও গোলা প্রতিহত করতে সক্ষম। তবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি বাড়ায় এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল সম্প্রতি নতুন লেসার-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন বিম’ যুক্ত করেছে।

ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা কাঠামো

ইসরায়েলের এয়ার ডিফেন্স তিন স্তরে বিভক্ত:

  1. আয়রন ডোম – স্বল্প পাল্লার রকেট ও মর্টার প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।

  2. ডেভিড’স স্লিং (বা ম্যাজিক ওয়ান্ড) – মাঝারি পাল্লার ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত।

  3. অ্যারো সিস্টেম – দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে কার্যকর।

আয়রন ডোম কীভাবে কাজ করে?

প্রতিটি আয়রন ডোম ইউনিটে থাকে রাডার, কন্ট্রোল সিস্টেম ও রকেট লঞ্চার। শত্রুপক্ষের রকেট, ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে তা বিশ্লেষণ করে এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্রতিরোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এতে আক্রমণকারী বস্তুগুলো আকাশেই ধ্বংস হয়। ইসরায়েলে বর্তমানে ১০টি মোবাইল আয়রন ডোম মোতায়েন রয়েছে। একেকটি ব্যাটারি ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে আসা রকেট থামাতে সক্ষম এবং একটি মাঝারি শহরকে সুরক্ষা দিতে পারে।

আয়রন ডোমের খরচ ও কার্যকারিতা

একটি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রের খরচ প্রায় ৪০-৫০ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৪৮-৬১ লাখ টাকা)। নির্মাতা রাফাল দাবি করে, এই সিস্টেমের সাফল্যের হার ৯০ শতাংশের বেশি এবং এটি ইতিমধ্যে ৫,০০০-এর বেশি রকেট প্রতিহত করেছে।

আয়রন বিম কী এবং এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

‘আয়রন বিম’ হলো একটি লেসার-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যেটি মূলত ড্রোন, ছোট ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানের গোলা প্রতিহত করতে ব্যবহৃত হয়। এই প্রযুক্তি ২০১৪ সালে রাফাল তৈরি করে। মে ২০২৫-এ চালু করার পরিকল্পনা থাকলেও, ২০২৫ সালের মে মাসেই ইসরায়েল সেনাবাহিনী এটি মোতায়েন করেছে।

আয়রন বিমের খরচ

লেসার প্রযুক্তি ব্যবহারে খরচ তুলনামূলক অনেক কম—প্রতিটি টার্গেট নিষ্ক্রিয় করতে কয়েক ডলার থেকে সর্বোচ্চ ২,০০০ ডলার পর্যন্ত খরচ হয় (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা)। তাই এটি আয়রন ডোমের তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী এবং ড্রোনের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে কার্যকর।