বাল্যবিয়ে, অভাব আর মানসিক বিপর্যয়ের বলি ৫ মাসের শিশু সোহাগী

পাবনার চাটমোহরে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনায় প্রকাশ পেয়েছে সন্তান হত্যার হৃদয়বিদারক কাহিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাল্যবিয়ের শিকার শ্রাবন্তী বিশ্বাস, বিয়ে হয় মধ্যবয়সী দিনমজুর কমল মণ্ডলের সঙ্গে। স্বামী কমলের আগের পক্ষের দুই সন্তান, অভাবের সংসার ও দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে মানসিকভাবে ধীরে ধীরে ভেঙে পড়েন শ্রাবন্তী।

এক বছর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় একটি কন্যাশিশু—সোহাগী। সন্তান জন্মের পর স্বামী খুশি হলেও, শ্রাবন্তীর মানসিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে থাকে। প্রসব পরবর্তী মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকা শ্রাবন্তী একপর্যায়ে নিজের পাঁচ মাস বয়সী শিশুকন্যাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ির পাশে নদীতে ফেলে দেন। শিশুটি মারা যায়।

চাটমোহর থানা পুলিশ জানায়, ঘটনার পর initially শ্রাবন্তী নিজেই স্বজনদের সঙ্গে মিলে শিশুকে খুঁজতে থাকেন। পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং পাবনা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।

সোমবার থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার জানান, বাল্যবিয়ে, দারিদ্র্য ও মানসিক অবসাদ—সবকিছু মিলিয়ে শ্রাবন্তী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং একমাত্র সন্তানকে হত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নেন।

এর আগে শনিবার সকালে বাড়ির অদূরে বড়াল নদী থেকে সোহাগীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটির বাবা কমল মণ্ডল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ শ্রাবন্তীকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।