নির্বাচন ইস্যুতে সরকার ও বিএনপির দূরত্ব কি তীব্র রাজনৈতিক তিক্ততায় রূপ নিচ্ছে?

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে এবং তা রাজনৈতিক তিক্ততায় পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা—খবর বিবিসি বাংলার।

বিশেষ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সিনিয়র নেতাদের সাম্প্রতিক শক্ত বার্তা এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পাল্টা প্রতিক্রিয়া—উভয় পক্ষের মধ্যকার উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই অবস্থান পাল্টাপাল্টির মধ্যে একটি ‘টাগ অব ওয়ার’ স্পষ্ট হচ্ছে।

বিএনপি বলছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে এবং এ বিষয়ে সরকারকে লিখিত রোডম্যাপ দিতে হবে। অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টা জাপানে এক বক্তব্যে বলেন, “সব দল নয়, একটি নির্দিষ্ট দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়।” এ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও দুই উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার দাবিও উত্থাপন করেছে বিএনপি, যদিও এখনো এসব দাবির বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত আসেনি।

বিশ্লেষক মো. সাইফুল আলম চৌধুরী মনে করেন, সরকার এখনো নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে না এবং একটি বিলম্বের পটভূমি তৈরির চেষ্টা করছে। তার মতে, "সংস্কার ও বিচার আগে শেষ করে পরে নির্বাচন করার কথা বললে তা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব নয়।"

অন্যদিকে, বিশ্লেষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মনে করেন, “বিএনপি দশ মাস ধরে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করেছে, এখন তারা বুঝতে পারছে সরকার হয়তো গো ধরেছে। ফলে বিএনপিও ধীরে ধীরে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে।”

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার পর দলটি দ্রুত নির্বাচন চাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যা সরকারকে আরও চাপে ফেলতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অবশ্য জানাচ্ছে, আগামী ৩০ জুনের আগেই যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। তবে তারিখ নির্ধারণ না হওয়ায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের ভাষায়, নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে রোডম্যাপ না এলে বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হবে এবং তা রাজনৈতিক অস্থিরতায় রূপ নিতে পারে।