ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের তীব্র উত্তেজনার ইতি টানার পর এবার দেশের ভেতরে নিরাপত্তা বলয় শক্তিশালী করতে তৎপর হয়েছে ইরান। যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরে তেহরান এবার মনোযোগ দিয়েছে গোপন শত্রুদের খোঁজে। এরই অংশ হিসেবে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তিন ব্যক্তিকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছে দেশটির সরকার।
বুধবার (২৫ জুন) ইরানের বিচার বিভাগের মুখপত্র মিজান জানায়, এসব ব্যক্তি জায়নবাদী শাসক ইসরায়েলের পক্ষে কাজ করছিলেন এবং ইরানের অভ্যন্তরে সহিংসতার উসকানি দিতে একটি গোপন অভিযানে যুক্ত ছিলেন। আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
রাষ্ট্রীয় ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম নূর নিউজ দাবি করেছে, চলমান নিরাপত্তা অভিযানে ইতোমধ্যে অন্তত ৭০০ জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে, যারা ইসরায়েলের হয়ে কাজ করছিল বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
১৩ জুন ইসরায়েলি বিমান হামলার পর থেকেই দেশজুড়ে অভিযান শুরু করে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী। সরকারপন্থী সূত্র বলছে, এই পদক্ষেপ ছিল ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য জরুরি এবং সময়োপযোগী।
তবে ভিন্নচোখে দেখছে মানবাধিকার সংগঠন ও প্রবাসী বিরোধী গোষ্ঠীগুলো। তারা বলছে, হামলার সুযোগে সরকার ভিন্নমত দমনে অভিযান চালাচ্ছে। ইসরায়েলের কিছু মহল এবং তেহরানবিরোধী প্রবাসী গোষ্ঠী মনে করেছিল, এই হামলা ইরানের ভেতরে রাজনৈতিক ভূমিকম্প সৃষ্টি করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনও গণবিক্ষোভ দেখা যায়নি, যদিও জনমানসে ক্ষোভ যে জমা হচ্ছে—তা মানছে পশ্চিমা সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
তেহরান অবশ্য শুরু থেকেই বলে আসছে, ইসরায়েল কেবল সীমান্তে নয়, বরং ভেতরে ভেতরেও ইরানকে অস্থিতিশীল করার নীলনকশা আঁকছে। তাই এই অভিযানে তারা দেখছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার এক কঠোর প্রয়াস।