ইরানের শাসনব্যবস্থাকে টার্গেট করে ইসরাইলের ভয়াবহ হামলা, তেহরানের পাল্টা আঘাতে রাতভর উত্তপ্ত তেল আবিব
শুক্রবার ভোররাতে ইরানে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালিয়েছে ইসরাইল। প্রায় ২০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এ হামলায়, যার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের শাসনব্যবস্থা ও সামরিক কাঠামো। অভিযানে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তেল আবিব।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ হামলার পর বলেন, "আমাদের লড়াই ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।"
তবে এ ঘটনার পর তেহরানও চুপ থাকেনি। রোববার রাতভর তেল আবিবসহ ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে চালানো হয় পাল্টা হামলা। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিবিসির সংবাদদাতা হুগো বুশেগা জানিয়েছেন, তেল আবিবসহ একাধিক শহরে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকলেও অনেক ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে বিস্ফোরণের সময় রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে।
সোমবার সকালেও উদ্ধারকর্মীরা তেল আবিবের ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযানে ব্যস্ত ছিলেন। ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দরনগরী হাইফায়ও আঘাত হেনেছে ইরানের হামলা, যেখানে একটি বড় তেল শোধনাগার অবস্থিত।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের সর্বশেষ হামলায় তেহরানের কুদস ফোর্সের একটি কমান্ড সেন্টার ধ্বংস হয়েছে। শুধু সামরিক নয়, পারমাণবিক ও জ্বালানি অবকাঠামো এবং সরকারি ভবনেও হামলা চালানো হয়েছে, যা ইরানের শাসনব্যবস্থাকে সরাসরি লক্ষ্য করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এমনকি কিছু আবাসিক এলাকাও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।
ইসরাইল বলেছে, এই অভিযান দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। অন্যদিকে, ইরান জানিয়ে দিয়েছে—আক্রমণের মুখে কোনো আলোচনা হবে না, এবং তারা আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংঘর্ষ শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। পাল্টা হামলার অংশ হিসেবে তেহরান এই আঘাত হেনেছে বলে জানানো হয়েছে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শুক্রবারের ইসরাইলি হামলায় ইতোমধ্যে ২২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।