গাজীপুরে শ্রমিকের আত্মহত্যা: বিক্ষোভে উত্তাল কারখানা, শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত শতাধিক
গাজীপুরের শ্রীপুরে তৈরি পোশাক কারখানার এক শ্রমিক কর্তৃপক্ষের অপমানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে ওই ঘটনার পরপরই সহকর্মীরা বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের তীব্র সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শ্রমিক ও ১১ পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঘটনাটি ঘটে শ্রীপুর উপজেলার ধনুয়া গ্রামের নতুনবাজার এলাকার জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড নামক কারখানায়।
আত্মহত্যা করা শ্রমিকের নাম মো. জাকির হোসেন (২৫)। তিনি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাসিন্দা ও জিন্নাত নিটওয়্যারে কাজ করতেন। সহকর্মীদের অভিযোগ, অসুস্থতার কারণে এক দিনের ছুটি নেওয়ার পর কাজে যোগ দিলে জাকিরকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহকর্মীদের সামনে কান ধরে ওঠবস করান। এই অপমান সইতে না পেরে তিনি কারখানার আটতলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো কারখানা এলাকা। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। শ্রমিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, পুলিশের হামলায় বহু গর্ভবতী নারী শ্রমিক আহত হন এবং আশপাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া কর্মীদেরও টেনে এনে মারধর করা হয়।
একাধিক শ্রমিকের দাবি, অর্ধশতাধিক শ্রমিককে আটক করা হয়েছে এবং পুলিশ ও সেনা সদস্যদের হাতে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে।
শিল্প পুলিশের একটি এপিসি (সাঁজোয়া গাড়ি) ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা জুবায়ের এম বাশার বলেন, “একজন শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন—এটি নিশ্চিত। এরপর শ্রমিকরা ভাঙচুর করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ডাকা হয়।”
শ্রীপুর থানার ওসি আব্দুল বারিক বলেন, “সকাল থেকেই শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ চলে। ১১ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং শ্রমিকরা একটি পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করেছে। আইনগত ব্যবস্থা চলমান।”
সংক্ষিপ্ত হাইলাইটস:
-
আত্মহত্যার কারণ: কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্যে অপমান
-
আত্মহত্যা: ৮তলা ভবন থেকে লাফ
-
সংঘর্ষে আহত: ১০০+ শ্রমিক, ১১ পুলিশ
-
পুলিশের পদক্ষেপ: টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিপেটা
-
শ্রমিকদের অভিযোগ: গর্ভবতী ও নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন, বাড়িতে ঢুকে হামলা
-
আটক: অর্ধশতাধিক