✅ যেসব কারণে অংশীদারি কুরবানি কবুল হয় না
ইসলাম ধর্মে কুরবানির জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে, বিশেষ করে অংশীদারি কুরবানির ক্ষেত্রে। এসব নিয়ম না মানলে কারও কুরবানি গ্রহণযোগ্য হবে না। নিচে অংশীদারি কুরবানি বাতিল হওয়ার প্রধান কারণগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. কুরবানির পশুতে শরিকের সীমা লঙ্ঘন
-
ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা: কেবল একজনের পক্ষ থেকে কুরবানি বৈধ। একাধিক ব্যক্তি মিলে কুরবানি করলে তা কারও জন্যই সহিহ হবে না।
-
গরু, মহিষ, উট: সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারবে। সাতের বেশি হলে কারও কুরবানিই গ্রহণযোগ্য হবে না।📚 উৎস: ফতোয়ায়ে কাজিখান ৩/৩৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭-২০৮
২. সমান অংশ না হওয়া
-
সাতজন মিলে কুরবানি করলে সবার অংশ সমান হতে হবে — অর্থাৎ এক-সপ্তমাংশ করে। কারও অংশ যদি কম বা বেশি হয় (যেমন একজনের দেড়ভাগ, আরেকজনের অর্ধভাগ), তবে কারও কুরবানিই কবুল হবে না।📚 উৎস: বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭
৩. হারাম সম্পদ থেকে কুরবানি করা
-
কোনো শরিক যদি হারাম উপার্জন থেকে কুরবানি করে, তাহলে পুরো কুরবানি অগ্রহণযোগ্য হবে — অর্থাৎ অন্য শরিকদের কুরবানিও কবুল হবে না।
৪. কুরবানির নিয়তে অস্পষ্টতা বা ভুল নিয়ত
-
অংশীদারদের সকলের নিয়ত কুরবানি করার জন্য হতে হবে। যদি কেউ শুধু গোশতের লোভে বা সামাজিকতা রক্ষার্থে শরিক হয়, তার কুরবানি কবুল হবে না, বরং অন্যদের কুরবানিও বাতিল হয়ে যাবে।📚 উৎস: সুরা হজ ৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮
৫. গরিবের ক্ষেত্রে অন্যকে শরিক করানো
-
গরিব ব্যক্তি (যার ওপর কুরবানি ফরজ নয়) যদি একা কুরবানি দেওয়ার নিয়তে গরু বা উট ক্রয় করে, তার পক্ষে তাতে অন্যকে শরিক করা বৈধ নয়। করলে কুরবানি সহিহ হবে না এবং সেই টাকার সদকা করা জরুরি।
৬. শরিকের মৃত্যু
-
কুরবানির আগে কোনো শরিক মারা গেলে, তার ওয়ারিশ যদি কুরবানির অনুমতি দেয়, তাহলে বৈধ হবে। না হলে তার অংশের টাকা ফেরত দিয়ে নতুন শরিক নিতে হবে।
৭. ভিন্ন নিয়ত যেমন আকিকা বা হজের কুরবানি
-
একই পশুতে কেউ কুরবানি, কেউ আকিকা বা হজের কুরবানির নিয়ত করলে তা বৈধ হবে; তবে হজের কুরবানির জন্য তা হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে।
৮. পশু দ্বারা উপকৃত হওয়া
-
নির্দিষ্ট করার পর কুরবানির পশু দ্বারা উপকার নেওয়া (যেমন – হালচাষ, বোঝা বহন, পশম কাটা) মাকরুহ। করলে এর মূল্য সদকা করে দিতে হবে।📚 উৎস: মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬; ফতোয়ায়ে কাজিখান ৩/৩৫৪