**দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলের হামলা তীব্রতর, রাফায় জোরপূর্বক উচ্ছেদ**  

 ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় তাদের হামলা আরও তীব্র করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে এবং সেখানে নতুন করে জোরপূর্বক উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে।  

 সোমবার সকালে, সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিখাই আদরেয়ি এক্স-এ (পূর্বের টুইটার) ঘোষণা দেন যে, ইসরায়েলি বাহিনী রাফা ও তার আশপাশের এলাকায় ‘অত্যন্ত কঠোর লড়াইয়ে’ ফিরছে।  তিনি ফিলিস্তিনিদের উপকূলীয় অঞ্চল আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেন।  যদিও এই এলাকাও আগে একাধিকবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে, তা সত্ত্বেও এটিকে ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।  

 উচ্ছেদ আদেশের পরপরই **আলজাজিরা আরবি** জানায়, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুর ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন।  

 জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (OCHA) গত সপ্তাহে জানায়, জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করলে প্রায় **১ লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত** হয়েছে।  গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নতুন এই হামলায় ইতোমধ্যে প্রায় **১ হাজার মানুষ নিহত** হয়েছে।  ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা **৫০ হাজার ছাড়িয়েছে**।  

 **গাজার ঈদেও শোকের ছায়া**  

 এদিকে, পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি উপলক্ষে ফিলিস্তিনিরা তিন দিনের **ঈদুল ফিতর** উদযাপন শুরু করলেও, গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকায় ঈদ রীতিমতো শোকে পরিণত হয়েছে।  

 ঈদের প্রথম দিন রবিবার **৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত** হন, আর সোমবার সকালেও হামলায় আরও **৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন**।  

 গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ থেকে **আলজাজিরার** প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানান, ইসরায়েলি বাহিনী **খান ইউনিসের অন্তত সাতটি পরিবারের বাড়িতে** হামলা চালিয়েছে।  এছাড়া, গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চল নুসেইরাত ও নেতজারিম করিডরের কাছেও প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।  

 উত্তর গাজার বেইত হানুনে একসময় যেখানে শিশুরা ঈদের আনন্দে মেতে উঠত, সেখানে এখন কেবল আতঙ্ক আর ভয়।  ফিলিস্তিনি শিশু **উইসাম নাসার** আলজাজিরাকে বলে,  

 “আমরা সৈকতের কাছেও যেতে ভয় পাচ্ছি, যদি ইসরায়েলি সেনারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।”   

 অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি যুবক **হুসেইন আলকাফারনা** বলেন,  

 “এই ঈদে আমাদের কোনো আনন্দ নেই।  আমরা নতুন পোশাকও কিনতে পারছি না, তার ওপর সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।”