লিবিয়ায় ২৭ বাংলাদেশিকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়: মূল হোতা জাহিদ গ্রেপ্তার
লিবিয়ায় ২৭ বাংলাদেশিকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনার মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত জাহিদ হোসেনকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সিংগারাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। শুক্রবার র্যাব-৫ এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার জাহিদের বাবার নাম এহরাম সরদার (৫০)। এই মানবপাচার চক্রের ভুক্তভোগীদের একজন, কুড়িগ্রামের ভোগরায় গ্রামের ইয়াকুব আলী (৩৮), দেশে ফিরে মামলা দায়ের করলে র্যাব অভিযান শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ জানান, প্রায় দুই বছর আগে ফেসবুকে ইয়াকুবের সঙ্গে পরিচয় হয় জাহিদের। নিজেকে ইতালিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক পরিচয় দিয়ে জাহিদ তাকে ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখান।
২০২৩ সালের ১০ আগস্ট ইয়াকুব জাহিদের বাবা ও চাচার সঙ্গে দেখা করেন এবং ২০ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালি যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আগাম ৫ লাখ টাকা পরিশোধের পর জাহিদ ইয়াকুবসহ আরও ২৬ জনকে দুবাই পাঠান। পরে তাদের নাইজার ও আলজেরিয়া হয়ে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। এই যাত্রাপথে তারা কিছুদিন কারাগারেও ছিলেন।
লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর সবাইকে একটি বাড়িতে আটক রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। এরপর ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ইয়াকুবের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হলে তারা ৩৫ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠান।
বাংলাদেশি গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশের পর লিবিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসের হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা হয়। ইয়াকুব দেশে ফেরেন ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি এবং ২৫ মার্চ থানায় মামলা করেন।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত জাহিদ অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, বিদেশ যাওয়ার আশায় প্রলুব্ধ করে লোকজনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করতেন। র্যাব জানিয়েছে, চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
0 Comments