এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা, সরকারি কর্মচারীদের মতো একই হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা এবার প্রতীকী অনশনে যাচ্ছেন।
শুক্র ও শনিবার দুই দিনব্যাপী এই কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের চলমান অবস্থান কর্মসূচি থেকে।
শিক্ষকরা জানান, এদিন সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।
‘এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ নামের মোর্চার ব্যানারে বেশ কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন নয় দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজীজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা কার্যকর হয়নি। তাই শুক্রবার ও শনিবার আমরা প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করব।”
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানসহ অন্যান্য দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা আসন্ন ঈদেই শতভাগ উৎসব ভাতা চাই। পাশাপাশি সরকারি কর্মচারীদের মতো সমান হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে যদি ঈদের আগে শতভাগ উৎসব ভাতা ও অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা আসে, তাহলে আমরা ক্লাসে ফিরে যাব।”
জোটের যুগ্ম সদস্য সচিব এবং বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরামের (বাশিফ) সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ রাজু বলেন, “আমরা সচিবালয়ে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষা করেছিলাম, কিন্তু উপদেষ্টা মহোদয়ের অনুপস্থিতির কারণে কোনো আলোচনা হয়নি। সরকার এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য চাকরিজীবীরা মূল বেতনের শতভাগ উৎসব ভাতা পেলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাত্র ২৫ শতাংশ ভাতা দেওয়া হয়, যা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক।”
শতভাগ উৎসব ভাতার দাবিতে পাবনার সুজানগরের খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুল্লাহ বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে ফিরিয়ে এনে সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করলে সরকারের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা নেই।”
তবে এ বিষয়ে রোববার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “শিক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত হলেন বেসরকারি খাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। তাদের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”
তিনি আরও জানান, “শিক্ষকদের জন্য অনলাইন বদলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের যে ভাতা দেওয়া হয়, তা অপ্রতুল। সীমিত বাজেটের মধ্যেও আমরা এই ভাতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।”
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরের জন্য একটি বাজেট তৈরি হচ্ছে, যেখানে শিক্ষকদের অবসরকালীন সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। “অবসর ভাতা না দেওয়া অত্যন্ত অনৈতিক। তবে এটি এক বছরের বাজেটের ওপর চাপিয়ে সমাধান করা যাবে না। আমরা বন্ডের মাধ্যমে একটি ফান্ড তৈরির চেষ্টা করছি, যা আগামী বছর থেকে কার্যকর হতে পারে।”
0 Comments