এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা প্রদান করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মৌলিক তথ্য সংশোধনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে অনলাইন এমপিও আবেদনের সময়সূচির বাইরেও তারা তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।
স্কুলের ক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ২০ মার্চের মধ্যে অনলাইনে তথ্য আপলোড করে হার্ডকপি জমা দিতে হবে। এরপর ৩০ মার্চের মধ্যে উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে এ তথ্য অগ্রায়ন করতে হবে এবং জেলা পর্যায় থেকে ১০ এপ্রিলের মধ্যে পরবর্তী অগ্রায়ন সম্পন্ন করতে হবে।
আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয় থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে তথ্য অগ্রায়ন করা হবে, এবং মাউশি অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা ২৭ এপ্রিলের মধ্যে তা অনুমোদন দেবে।
অন্যদিকে, কলেজের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ২০ মার্চের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে। আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয় থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে অগ্রায়ন করা হবে, এবং মাউশি অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা ২৭ এপ্রিলের মধ্যে অনুমোদন প্রদান করবে।
বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইএফটিতে জানুয়ারির এমপিও ছাড়ের মেসেজ পাঠানো শুরু-
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে জানুয়ারির এমপিও ছাড়ের মেসেজ পাঠানো শুরু হয়েছে। এর আগে, গত সোমবার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ব্যাংকে পৌঁছায়। দুই দিন পর থেকেই মেসেজ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী দৈনিক আমাদের বার্তা-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ২৫ ফেব্রুয়ারি স্কুল-কলেজের মোট ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৭৬১ জন শিক্ষক-কর্মচারীর জানুয়ারির এমপিও অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে স্কুলের ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৩৪ জন এবং কলেজের ৮০ হাজার ৫২৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জানুয়ারির (আংশিক-লট-১) মূল বেতনের ৬% অবসরভাতা তহবিলের চাঁদা বাবদ ৪৮ কোটি ৩০ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৭ টাকা এবং মূল বেতনের ৪% কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের চাঁদা বাবদ ৩২ কোটি ২০ লাখ ৬৫ হাজার ৮৩৮ টাকা ইএফটির মাধ্যমে ছাড় করা হয়েছে।
এছাড়া, বেতন ও ভাতার সরকারি অংশ বাবদ ৮৪৩ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯০ টাকা ইএফটির মাধ্যমে দেওয়ার জন্য মঞ্জুর করা হয়েছে।
এর আগে, সর্বশেষ তৃতীয় ধাপে স্কুল-কলেজের মোট ৮৪ হাজার ৭৭৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অ্যাকাউন্টে টাকা ছাড় করা হয়। তাদের মধ্যে স্কুলের ৬৫ হাজার ৬৮৩ জন এবং কলেজের ১৯ হাজার ৯৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরেই ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা পেয়ে আসছেন। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে অ্যানালগ পদ্ধতিতে বিতরণ করা হতো। ফলে শিক্ষকদের বেতন তুলতে বিভিন্ন ধাপে অনুমোদনের প্রয়োজন হতো এবং এ কারণে অনেক সময় দেরি হতো। এমনকি, আগের মাসের বেতন পেতে পরের মাসের ১০ তারিখের পরেও অপেক্ষা করতে হতো।
এই পরিস্থিতি দূর করতে, গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় যে, বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা ইএফটি পদ্ধতিতে প্রদান করা হবে।
প্রাথমিকভাবে, ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটির মাধ্যমে দেওয়া হয়। পরে, ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশ পান। এরপর, দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ছাড় করা হয়।
এখন থেকে, ইএফটি পদ্ধতির ফলে শিক্ষকদের আর বিলম্বে বেতন-ভাতা পেতে হবে না, যা তাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটাবে।
0 Comments