❖ জুমার দিনে নফল রোজা রাখা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামে জুমার দিনকে শুধু রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয় বলে বিবেচিত। জুমার দিন নফল রোজা রাখার বিষয়ে অনেকেই বিশেষ ফজিলতের কথা ভাবেন, কিন্তু সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জুমার দিনকে এককভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিসে এসেছে:
"তোমরা রাতসমূহের মধ্যে শুধু জুমার রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করে নিও না। একইভাবে, দিনসমূহের মধ্যে শুধু জুমার দিনকে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করো না—তবে যদি এটি এমন কোনো দিনে পড়ে যা তোমার অভ্যাসগত রোজার দিন হয়, তাহলে রোজা রাখতে পারো।"
(সহিহ মুসলিম – হাদিসটি আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত)
এই হাদিস থেকে স্পষ্ট যে, শুধু জুমার ফজিলতের কারণে ওই দিন নফল রোজা রাখা অনুচিত। তবে যদি জুমার দিনটি এমন কোনো দিন হয় যেদিন কেউ নিয়মিত রোজা রাখেন, তাহলে রোজা রাখা জায়েয। উদাহরণস্বরূপ:
-
যদি কেউ প্রতি মাসে আয়্যামে বীজ (১৩, ১৪, ১৫ তারিখ)-এর রোজা রাখেন, এবং এর মধ্যে কোনো দিন জুমা পড়ে যায়—তবে সে রোজা রাখা জায়েয।
-
কেউ যদি প্রতি সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখেন, এবং কোনো জুমার দিন বৃহস্পতিবার পড়ে—তাহলেও রোজা রাখা বৈধ।
❖ রাসুলুল্লাহ (সা.) কোন কোন দিনে রোজা রাখতেন?
আয়েশা (রাযি.) বলেন:
“রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন।”
(সুনানে তিরমিজি)
আরেক হাদিসে এসেছে:
"সোম ও বৃহস্পতিবারে আমলসমূহ আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আমি চাই আমার আমল পেশ হোক রোজাদার অবস্থায়।”
(সুনানে তিরমিজি, সুনানে নাসাঈ – আবু হুরাইরা রাযি. বর্ণিত)
✅ সংক্ষেপে উপসংহার:
-
শুধু জুমার ফজিলতের কারণে জুমার দিনকে এককভাবে নফল রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা মাকরুহ।
-
তবে নিয়মিত নফল রোজার দিন যদি জুমার দিন পড়ে, তাহলে রোজা রাখা জায়েয।
-
নফল রোজা রাখার জন্য সোম ও বৃহস্পতিবার শ্রেষ্ঠ দিন।
0 Comments