সন্তানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে ‘ক্রিম আপা’ শারমিন শিলা কারাগারে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি ভিউ পেতে সন্তানদের ওপর ‘নির্যাতন চালিয়ে’ ভিডিও তৈরি ও প্রকাশের অভিযোগে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিনাত জাহানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, আশুলিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) ওমর ফারুক তাকে আদালতে হাজির করে আটক চেয়ে আবেদন করেন।

শারমিন শিলার পক্ষে একাধিক আইনজীবী জামিন আবেদন করেন, তবে আদালত তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের কর্মকর্তা আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, গত বুধবার আশুলিয়া থানায় সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান শারমিন শিলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান, যিনি সামাজিক মাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। তিনি নিজ হাতে তৈরি নানা ধরনের ক্রিম বিক্রির পাশাপাশি মেকআপ বিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করে থাকেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে, যাদের নিয়ে নিয়মিত ভিডিও বানিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করতেন তিনি।

গত ৩ মার্চ বিকেলে শারমিন শিলার ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, তিনি তার ছোট মেয়েকে জোর করে খাবার খাওয়াচ্ছেন। মেয়েটি খেতে না চাইলে এক হাতে মুখ চেপে ধরে অন্য হাতে কেক জাতীয় খাবার মুখে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, শারমিন শিলার এই আচরণ মায়ের মতো নয়, বরং নিষ্ঠুর। এতে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা শিশু আইন লঙ্ঘনের শামিল।

শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘একাই একশো’ গত ৬ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে শারমিনের বিরুদ্ধে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়।

ঘটনা ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কের মুখে শারমিন শিলা এক ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান এবং জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের ভিডিও আর প্রকাশ করবেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষমা চাইলেও তার বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।