সরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষার গর্ব মাটিতে মিশিয়ে দিল ইয়েমেনের হুথিরা

ইসরাইলের আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সকল স্তরকে ব্যর্থ করে দিয়ে হুথি-নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী রোববার একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তেলআবিবের নিকটবর্তী বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরাসরি আঘাত হানে। টাইমস অব ইসরাইলের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির চার-স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চূর্ণ করে ক্ষেপণাস্ত্রটি বিমানবন্দরের কেন্দ্রস্থলে বিস্ফোরিত হয়।

হামলার পরপরই ইসরাইলের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বহু ফ্লাইট বাতিল করা হয় অথবা বিকল্প রুটে পাঠানো হয়।

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ‘ইদিয়োথ আহরোনোত’ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমাবন্দরের একটি স্থানে প্রায় ২৫ মিটার গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এবং এতে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।

ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে দাবি করেন, “আমরা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছি, এবং ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী তা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই হামলা শুধু ইসরাইলের জন্যই নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা বাস্তবতার জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। কারণ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এখনও অধিকাংশ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।

ইসরাইলের ‘আয়রন ডোম’, ‘ডেভিডস স্লিং’ এবং ‘অ্যারো’ প্রযুক্তি সাধারণত সাবসনিক বা সুপারসনিক গতির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে পারছে না—এটা দেশটির সামরিক সক্ষমতার ওপর বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

হামলার দৃশ্য সম্প্রচার করেছে একাধিক ইসরাইলি গণমাধ্যম, যেখানে বিস্ফোরণের পর তৈরি হওয়া বিশাল গর্ত ও ধ্বংসস্তূপের চিত্র উঠে আসে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বেসামরিক জনগণের মধ্যে। ফলস্বরূপ, ইসরাইলজুড়ে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ নিরাপত্তার আশায় মাটির নিচের বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছে।

হামলার তাৎক্ষণিক প্রভাব হিসেবে রোববারের জন্য নির্ধারিত ইসরাইলি মন্ত্রিসভার বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। জেরুজালেম পোস্টের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইসরাইল সরকার এখন তার ইয়েমেন-নীতি পুনর্মূল্যায়ন করছে এবং এ হামলার সরাসরি জবাব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে।